
এসএসসি পাস করেই ভুয়া ডাক্তার: অনিয়মের মাধ্যমে ফিরোজ আহমেদের কোটি টাকার সম্পদ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ফিরোজ আহমেদ এসএসসি পাস করে ডিএমএফ (ডিপ্লোমা অব মেডিকেল ফ্যাকাল্টি) কোর্স সম্পন্ন করার পর নিজেকে ডাক্তার হিসেবে পরিচিত করে তুলেছেন। নিয়মিত রোগী দেখার পাশাপাশি, ব্যবস্থাপত্রও দিয়ে আসছেন। তবে চিকিৎসার নামে প্রতারণা ও অনিয়মের মাধ্যমে তিনি কোটিপতি হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ফিরোজ আহমেদের ব্যাকগ্রাউন্ড:
ফিরোজ আহমেদ তাড়াশ উপজেলার সরাপপুর বোয়ালিয়া গ্রামের হজরত আলীর ছেলে। তার বাবা ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের কর্মসৃজন প্রকল্পের মাটিকাটা শ্রমিক। দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে মাধাইনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর বগুড়া সাইক মেডিকেল ইনস্টিটিউট থেকে ডিএমএফ কোর্স সম্পন্ন করেন। ২০১২ সালে এক প্রবাসীর বোনকে বিয়ে করার পর, তিনি “মা জেনারেল হাসপাতাল” এর দায়িত্ব নেন এবং আস্তে আস্তে নিজেকে ডাক্তার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। পরে নিজস্ব হাসপাতালও গড়ে তোলেন।
প্রতারণার মাধ্যমে সম্পদের পাহাড়:
স্থানীয় সূত্রমতে, ফিরোজ আহমেদ অনিয়ম ও প্রতারণার মাধ্যমে দ্রুতই অর্থবিত্তের মালিক হন। হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় সাত শতক জমি কিনে সেখানে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করছেন, যার বর্তমান মূল্য প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া তার মালিকানায় রয়েছে মাইক্রোবাস ও গ্রামের বাড়িতে কয়েক বিঘা জমি।
অভিযোগ ও অনিয়ম:
ফিরোজ আহমেদের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা এবং পরীক্ষার নামে রোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, তিনি প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেন এবং নার্স বা আয়াদের দিয়ে সিজার করানোর অভিযোগও উঠেছে।
পারিবারিক কেলেঙ্কারি ও প্রতারণা:
প্রবাসী নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ফিরোজ আহমেদ তাদের বোনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তালাক দিয়েছেন এবং পরে এক চিকিৎসককে বিয়ে করেছেন। এই ঘটনায় নুরুলের পরিবার থানায় মামলা করেছে।
প্রশাসনিক পদক্ষেপ:
সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায় জানান, ডিএমএফ ডিগ্রিধারী কেউ নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করতে পারেন না। এ বিষয়ে ফিরোজ আহমেদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।